শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
গণতন্ত্র আমাদের হাতের নাগালে নাই-লালমনিরহাটে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় লালমনিরহাটে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ও ঔষধ সেবা অর্ধেক মূল্যে হত দরিদ্রদের ছানি অপারেশন অরবিট চক্ষু হাসপাতালে লালমনিরহাটে শীতের হরেক রকমের পিঠার দোকানের পসরা নিয়ে বসছেন বিক্রেতারা বিএনপির কর্মী সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত বাবা-মাকে একটা বাড়ি করে দেওয়ার স্বপ্ন যেন চিরতরে হারিয়ে গেলো লালমনিরহাটের শহীদ শাহিনুর আলমের বিএনপির কর্মী সভা অনুষ্ঠিত যতদিন নির্বাচন হবে না, ততদিন স্বাভাবিক অবস্থায় দেশে ফিরে আসবেনা-অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু আলু চাষ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন লালমনিরহাটের কৃষকেরা লালমনিরহাটে সরকার ফার্মেসী এর শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি (জিআর) চাল কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগ

কালীগঞ্জে মাদকের ছড়া ছড়ি

লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় মাদকের নিরাপদ রুট হিসেবে জানান দিচ্ছে। আর এখানে উঁকি দিচ্ছে দূর দুরান্তের মাদক সেবন কারীরা। যার ফলে যুব সমাজে নতুন করে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক। মাদক হাতের নাগালে থাকলেও পুলিশ সেই ঘটনা জানেনা। মাদক সেবনকারীদের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সেখানে পুলিশকে নড়েচড়ে বসতে দেখা গেছে।

 

জানা যায়, লালমনিরহাট জেলার ৫টি উপজেলার মধ্যে কালীগঞ্জের চন্দ্রপুর ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি মাদকের গোপন আড়ৎ গড়ে উঠেছে। এই মাদক ব্যবসায়ীর কেউ কেউ থানার সোর্স বা দালাল এর কাজে জড়িয়ে আছেন। তাদের একজন গোড়ল ইউনিয়নের ইউপি সদস্য বাদশা মিয়া। বেশ কিছু দিন আগে সেই বাদশা ও তার স্ত্রী মিলে নিজ বাড়িতেই জমজমাট মাদক ব্যবসা ও মাদক বিক্রির ভিডিও ভাইরাল হয়। জনপ্রতিনিধির বাড়িতে এমন দৃশ্য দেখে সচেতন মহলে শুরু হয় আলোচনা। তার আগে কোন ভাবেই পুলিশ প্রশাসন জানতেন না সেই বাড়ির এই মাদক ব্যবসার কথা।

 

গত ১৩ জুলাই এমন আরও একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। কালীগঞ্জের চন্দ্রপুর গ্রামের ঢায়াইয়াটারী এলাকার ভুট্টু মিয়া প্রকাশ্যে ফেন্সিডিল বিক্রির ভিডিও ফাঁস হওয়া পরেই পুলিশ নড়েচড়ে বসেন। ফেন্সিডিল বিক্রির ভিডিওটি প্রকাশ হওয়া ও গ্রেফতারের আগ পযর্ন্ত ভুট্টু মিয়া বলতেন আমার টাকা কিছু অফিসারের পকেটে যায় এটা কোন ব্যাপার না!

 

টাকার বিনিময়ে ফেন্সিডিলের বোতল যেন হাত বাড়ালেই পাওয়া যায়! চন্দ্রপুর ইউনিয়নের পাটিকাপাড়ার রাস্তার ধারে প্রতিদিন বোতল বিনিময় হয়। এই সিন্ডিকেট এর একজন সুমনের ছবিও ভাইরাল হয়েছে ইতিমধ্যে। সবমিলে কালীগঞ্জ আজ মাদকে সয়লাব।

 

এমনি অনেক মাদকের ঘটনা পুলিশের অজানার কারনে রাব-১৩ গোপন সংবাদ পেয়ে একাধিকবার কালীগঞ্জে অভিযান চালিয়ে মাদক উদ্ধার করেছে।

 

স্থানীয়রা মন্তব্য করে বলেন, প্রকাশ্যে মাদকের রমরমা বাণিজ্য দেখতে খামারভাতি ও জাওরানী যান শুধু নিয়ন্ত্রণে কতটা কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় তা স্পষ্ট হয়ে যাবে আপনার নিকট।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, এই উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় প্রতিদিন মোটর সাইকেল জটলা দেখা যায়। এই মোটর সাইকেলে আসা কিছু ব্যক্তি রংপুর হতে আসেন মাদক খেতে।

 

গত ২০ জুলাই রাত আনুমানিক ৮ঘটিকার সময় মাদকের টাকা ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে মাদক সম্রাট কান্দুর ডাকাতের দুই ছেলের মধ্যে ঝগড়া বাঁধে। সেই ঝগড়ায় বড় ভাই জারিফুলকে এলোপাতারী কোপ মারেন ছোট ভাই আরিফুল। জারিফুলকে গুরুতর আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।

 

বিভিন্ন মারফত জানা যায়, কালীগঞ্জের বহুস্থানে সবজির দোকানে ও বাজারের ব্যাগে করে ফেন্সিডিল বিক্রি করা হয়ে থাকে। হাত বাড়ালেই মাদক, অথচ মাদকের গোপন আড়ৎ এ নেই পুলিশের অভিযান। যেটুকু অভিযান তা রোড-ঘাটে। এমনকি রিকশা ও অটো ভ্যানে করে মাদকের গোপন আড়ৎ থেকে ঝুড়িতে করে ফেন্সিডিল আনা নেওয়া করা হয়। বিশেষ করে কাকিনা ইউনিয়ন হয়ে মহিপুর সেতু হয়ে হারাগাছ এলাকায় মাদক যায়। এমন সময় একটি অটো ভ্যান তল্লাশি করে কবির হোসেন নামে একজনকে কাকিনার রুদ্রেশ্বর এলাকা থেকে গত ১ জুলাই ৩শত বোতল মাদকদ্রব্য ফেন্সিডিলসহ গ্রেফতারও করতে দেখা যায় পুলিশকে। এবং সেই এলাকার কাশেম বাজারে বেপরোয়া মাদক কারবারির ছুড়ির আঘাতে দুই পুলিশের এসআইসহ ৪জন আহত হলেও দীর্ঘ এক মাস পর ওই মাদক ব্যবসায়ী তোফাজুলকে দলগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার পরেও পুলিশ গতানুগতিক নিয়মেই চলছে, নেই কোন নতুন কৌশল।

 

কাকিনার এক শিক্ষক বলেন, “মাদক কারবারীরা কোন না কোন ভাবে যেখানে প্রশাসনের আশ্রয় পাবেন সেই স্থানে মাদকের ছড়াছড়ি হবে এটাই স্বাভাবিক, কই এর আগে এমন ত ছিলো না, তাহলে এখন এমন ঘটছে কেন?”

 

ওই শিক্ষক আরও বলেন, “ফেন্সিডিল গাঁজার চালান ভারি বলে কিছু না হয় পুলিশ ও ডিবি ধরছেন, কিন্তু কই হিরোইন ইয়াবা তো ধরতে দেখা যাচ্ছে না, নাকি সেই মাদক গুলো বাজারে নেই? তাহলেই বুঝ একটা ছারো একটা ধরো চলছে! চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের বাড়িতে অভিযানের দেখা নেই, পুলিশের চৌকসয়তা কই, কালীগঞ্জ থানাকে রহস্যময় মনে করি আর এজন্য খুব ভয় হয়!

 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, কালীগঞ্জের সর্বশেষ কাকিনার রুদ্রেশ্বর ও কাশেম বাজার তার পরে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলা। পুরো উপজেলার বেশিভাগ মাদক সেই রুটে চলে যায়। সেখানে গত জুন ও চলতি জুলাই মাসের মাদক উদ্ধারে শতকরা ৭০ ভাগ মাদক লালমনিরহাট ডিবি পুলিশ ধরেছে আর কালীগঞ্জ থানার এরিয়া হওয়ার পরেও সেখানে কালীগঞ্জ থানার পুলিশ মাদক ধরেছে শতকরা ৩০ ভাগ!

 

লালমনিরহাট জেলা জুরে এখন আলোচনা হচ্ছে, কালীগঞ্জের থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জেলার মধ্যে বার বার শ্রেষ্ঠ ওসি নির্বাচিত হচ্ছেন। অথচ জেলার মধ্যে সবচেয়ে মাদকে সয়লাব হয়ে আছে কালীগঞ্জে!

 

শিয়াল খোওয়া বাজারের এক মুদির দোকানী নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, দিন দিন কালীগঞ্জের আইন শৃঙ্খলা চরমভাবে নষ্ট হচ্ছে, সমাজ নষ্ট হচ্ছে, মাঝে মাঝে দেখি কিছু পাতিনেতা মাদকের টাকা ভাগাভাগি করে, তাদের মাঝে কোন কোন সময় ঝগড়াঝাটিও হয়, পরে দেখি তাদের কেউ কেউ পুলিশের সাথে উঠা বসা করছে!

 

চন্দ্রপুর ইউনিয়ন জুরে মাদকের জাল বুনে গেছে। গোড়ল ইউনিয়নে ইউপি সদস্য ও স্থানীয় নেতারা মাদক হাট বসান। দলগ্রাম ও কাল ভৈরব মাদকের গোপন আড়ৎ। চাপারহাট ও শিয়াল খাওয়া এলাকায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে নিতে চাচ্ছেন একাধিক কিশোর গ্যাং।

 

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এটিএম গোলাম রসুল এর সাথে যোগাযোগ হলে তিনি বলেন, “আমি মাত্র সাত মাস হল এসেছি এর মাঝে কিছু পরির্বতন করার চেষ্টা করেছি, আপনাদের সকলের সহযোগিতা দরকার, আপনার কোন কিছু লেখলে থানার দুর্নাম তথা জেলার দুর্নাম।

 

তিনি এক প্রশ্নের জবাবে রাগান্বিত কন্ঠে বলেন, “দেখুন সীমান্ত দিয়ে মাদক আসে আপনি বিজিবিকে নিয়ে লেখেন দেখি, তাহলে সাবাসি দিব।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone